প্রকৃতি ও প্রত্যয়

প্রকৃতি কাকে বলে?
সকল পদেরই একটি মূল অংশ রয়েছে। এই মূল অংশকে প্রকৃতি বলে। প্রকৃতি দুই প্রকারের হয়। যথাঃ ক্রিয়াপ্রকৃতি এবং নামপ্রকৃতি।

প্রাতিপদিক সম্পর্কে না জানলে প্রকৃতি ও প্রত্যয়ের ধারণা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। আসুন জেনে নেই, প্রাতিপদিক কাকে বলে? প্রতিপদ থেকে প্রাতিপদিক শব্দটি এসেছে। আর প্রতিপদ শব্দের অর্থ হল আরম্ভ বা সূচনা। এই মর্মে বলা যায়, যা থেকে পদের আরম্ভ বা সূচনা হয়, তাকে প্রাতিপদিক বলে। এক কথায় বলা যায়, বিভক্তিহীন নাম শব্দকে প্রাতিপদিক বলে। মনে রাখতে হবে যে, মৌলিক এবং সাধিত এই দুই ধরনের শব্দই প্রাতিপদিকের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ লাজ, বড়, ঘর - এই মৌলিক শব্দগুলো যেমন প্রাতিপদিকের উদাহরণ, তদরূপ সাধিত শব্দ - উত্তরবঙ্গ, হিমালয় ইত্যাদিও প্রাতিপদিকের উদাহরণ।

প্রত্যয় কাকে বলে?
যেসব অর্থহীন বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ ধাতু বা শব্দের সাথে যোগ হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, তাদেরকে প্রত্যয় বলে।
প্রত্যয় কত প্রকার ও কি কি?
প্রত্যয় প্রধানত দুই প্রকার। যথাঃ ১. কৃৎ প্রত্যয় এবং ২. তদ্ধিত প্রত্যয়।
কৃৎ প্রত্যয়ঃ ধাতু বা ক্রিয়ামূলের পরে যেসব প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, তাদেরকে কৃৎ প্রত্যয় বলে। যেমনঃ পড়্‌ + আ = পড়া। এখানে আ প্রত্যয়টি একটি ধাতু পড়্‌ এর পরে যুক্ত হয়ে নতুন একটি শব্দ পড়া গঠন করেছে। তাই আ প্রত্যয়টি একটি কৃৎ প্রত্যয়। কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত হওয়ার ফলে যেসব শব্দ গঠিত হয় সেগুলোকে কৃদন্ত শব্দ বলে। অতএব পড়া শব্দটি একটি কৃদন্ত শব্দ।
তদ্ধিত প্রত্যয়ঃ শব্দের পরে যেসব প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, তাদেরকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে। যেমনঃ ঢাকা + আই = ঢাকাই। এখানে আই প্রত্যয়টি একটি শব্দ ঢাকা এর পরে যুক্ত হয়ে নতুন একটি শব্দ ঢাকাই গঠন করেছে। তাই আই একটি তদ্ধিত প্রত্যয়। তদ্ধিত প্রত্যয় যুক্ত হওয়ার ফলে যেসব শব্দ গঠিত হয় সেগুলোকে তদ্ধিতান্ত শব্দ বলে। অতএব ঢাকাই শব্দটি একটি তদ্ধিতান্ত শব্দ।

বাংলা ভাষায় অসংখ্য প্রত্যয় রয়েছে। নিচে কিছু প্রত্যয় এবং প্রত্যয় গঠিত শব্দের উদাহরণ সম্বলিত ছক প্রদান করা হলো।
প্রত্যয় উদাহরণ প্রত্যয়ের ধরন
অ- শিশু + অ = শৈশব, যুবন + অ = যৌবন। তদ্ধিত প্রত্যয়
অক- পঠ্‌ + অক = পাঠক, নিন্দ্ + অক = নিন্দুক। কৃৎ প্রত্যয়